বুকে ব্যথার লক্ষণ কি - বুকে ব্যথার জন্য ঘরোয়া প্রতিকার
পেজ সূচিপত্র
- বুকে ব্যথার লক্ষণ কি
- বুকে ব্যথার কারণ
- বুকে ব্যথার জন্য ঘরোয়া প্রতিকার
- হঠাৎ বুকে ব্যথা হলে করণীয়
- বুকে ব্যথার প্রাথমিক চিকিৎসা
- বুকে ব্যথা হলে কি ওষুধ খেতে হবে
- গ্যাস্ট্রিকের কারণে বুকে ব্যথা
- শেষকথা
বুকে ব্যথার লক্ষণ কি
আপনার বুকে ব্যথা অনেক সময় জটিল কোন সমস্যা থেকেও হতে পারে। এর কোন নির্দিষ্ট সময় নেই যে কখন বুকে ব্যথা করতে পারে। যেকোনো সময় আপনার শরীরে বুকে ব্যথার লক্ষণ কি এবং বুকে ব্যথার জন্য ঘরোয়া প্রতিকার প্রয়োজন হতে পারে। তাই দেরি না করে হঠাৎ যদি আপনার বুকে ব্যথা উঠে যায় তাহলে অবশ্যই কিছু লক্ষণ প্রকাশ পাবে যেমন,
- বারবার আপনার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হবে।
- বুকের মধ্যে প্রচন্ড চাপ বা টানটান অনুভব হবে।
- অনেক বেশি পরিশ্রম করার সময় বুকে ব্যথা হতে পারে।
- পেটে ব্যথার ফলেও বুকে ব্যথা হতে পারে।
- জ্বর, হাঁচি, কাশি ও ঠান্ডার ফলেও বুকে ব্যথা করতে পারে।
- বমি বমি ভাব হলেও বুকে ব্যথা করতে পারে।
- অনেক সময় আপনার হার্টবিট যদি কমে যায় সেক্ষেত্রেও বুকে ব্যথা করতে পারে।
- মাথাঘোরা, ক্লান্তি ও অবসাদের ফলে বুকে ব্যথা করতে পারে।
- পিঠের ব্যথার ফলে বুকের সামনের দিকে অনেক সময় ব্যথা অনুভব হয়।
- দুশ্চিন্তা বুকে ব্যথার আরেকটি লক্ষণ হতে পারে।
- মুখে যদি অ্যাসিডিটি ভাব হয় ও টক ঢেঁকুর স্বাদ অনুভব হয়।
- অনেক সময় খাবার গিলতে সমস্যা হলেও বুকে ব্যথা করতে পারে।
বুকে ব্যথার কারণ
মনে করুন, আপনার শরীরে কোন ব্যথা নিয়মিত করছে বিশেষ করে বুকে ব্যথা। কিন্তু আপনি বুঝতে পারছেন না হঠাৎ করেই কেন আপনার বুকে ব্যথা হচ্ছে। অনেক সময় শরীরে সাধারণ কোন সমস্যা থেকেই বুকে ব্যথার সৃষ্টি হতে পারে। অনেক কারণেই আমাদের বুকে ব্যথা করতে পারে। বুকে ব্যথার গুরুতর কিছু কারণ সম্পর্কে আলোচনা করা যেতে পারে।
আমাদের দেহের মধ্যে যে ফুসফুস রয়েছে সেখানে হৃদপিণ্ড অবস্থান করছে যার মধ্যে খাদ্যনালী রয়েছে। অনেক সময় এই বুকে ব্যথা মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের বেশি হয়ে থাকে বিশেষ করে পঁয়তাল্লিশের বেশি বয়স হলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়া সম্ভাবনা বেশি থাকে।
আবার, অনেক সময় মহিলাদের ক্ষেত্রে মেনোপজ হওয়ার পরে এই ধরনের ঝুঁকির আশঙ্কা থাকতে পারে। বুকে ব্যথার লক্ষণ কি এবং বুকে ব্যথার জন্য ঘরোয়া প্রতিকার সম্পর্কে ধারণা না থাকলে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। ডায়াবেটিস, অনেক বেশি চর্বি রক্তে থাকলে, উচ্চ রক্তচাপ ও ধূমপানের ফলে বুকে ব্যথার প্রবণতা বাড়তে পারে।
আরও পড়ুনঃ বুকে ব্যথার লক্ষণ কি - বুকে ব্যথার জন্য ঘরোয়া প্রতিকার
যদি কখনো বুক ধরফর করার সমস্যাটিও দেখা দেয় অথবা খুব অল্পতেই যদি শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দেয় বুক চেপে ধরার সমস্যা হচ্ছে সেক্ষেত্রে হার্টের সমস্যা হতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় একজন লোক সিঁড়ি দিয়ে উঠছে সে ক্ষেত্রে তার খুব হাঁপানি হচ্ছে এই জটিলতায়ও বুকে ব্যথা বাড়তে পারে।
আপনার যদি হাড় বা পেশীতে কোন ধরনের সমস্যা থেকে থাকে সেই ক্ষেত্রে বুকে ব্যথা চাপ যুক্ত পেশির কারণে হতে পারে। অথবা আপনার পাঁজরের চারপাশে যদি ব্যথা বা ফোলাভাব থাকে তাহলেও বুকে ব্যথার সৃষ্টি হতে পারে। আপনার মধ্যে যদি কোন আতঙ্ক কাজ করে কোন বিষয় নিয়ে তাহলে আপনার হৃদস্পন্দন বেড়ে যেতে পারে যার ফলে বুকে ব্যথা হতে পারে।
আপনার ফুসফুসে যদি কোন রকমের শ্বাসকষ্টের মত কোন সমস্যা থাকে তাহলে নিউমোনিয়ার যদি কোন প্রভাব থাকে সেই ক্ষেত্রেও বুকে ব্যথা করতে পারে। বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশনের প্রভাবে বুকে ব্যথার সৃষ্টি হয় যার কারণে পরবর্তীতে জটিল সমস্যায় আপনাকে ভুগতে হয়।
বুকে ব্যথার জন্য ঘরোয়া প্রতিকার
নিয়মিত বুকে ব্যথাকে অবহেলা করার কোন সুযোগ নেই তাই এই ব্যথা মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছানোর পূর্বেই আপনাকে বুকে ব্যথার লক্ষণ কি এবং বুকে ব্যথার জন্য ঘরোয়া প্রতিকার এর জন্য ব্যবস্থা নিতে পারেন। বুকে ব্যথার জন্য ঘরোয়া প্রতিকার সম্পর্কে বিশেষ কিছু বিষয় তুলে ধরা হলো -
হঠাৎ বুকে ব্যথা হলে করণীয়
আমাদের জীবনে প্রত্যেকটি মানুষেরই বুকে ব্যথার লক্ষণ কি তা জানা উচিত। হঠাৎ করেই বুকে ব্যথা হতে পারে। যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমরা অ্যাসিডিটির সমস্যা মনে করে এই বুকে ব্যথাকে কমানোর জন্য অ্যান্টাসিড ওষুধকে খেয়ে থাকি। এটা কিন্তু আমাদের শরীরের জন্য মোটেই ঠিক নয় কারণ আপনি যদি নিশ্চিত না থাকেন আপনার বুকে ব্যথা কেন হয়েছে তাহলে যে কোন সমস্যা হতে পারে।
আমাদের সঠিক ধারণার অভাব থাকার ফলে অনেক সময় হার্ট অ্যাটাকের মত গুরুতর রোগের শিকার হতে হয়। অবশ্য বুকে ব্যথার জন্য ঘরোয়া প্রতিকার না জানলে সমস্যা হবে। আপনার যত দিন যাবে ততই শরীরের অবস্থা জটিল হতে থাকবে। কারণ শারীরিক জটিলতার সমস্যা, তখনই বারে যখন আপনি তার জন্য সঠিক কোন চিকিৎসা না করবেন।
আরও পড়ুনঃ গোলাপ জল কখন ও কিভাবে ব্যবহার করতে হয়
আপনার বুকে যদি কখনো চিনচিন করে ব্যথা ওঠে যায় তাহলে সেটাকে অবহেলা না করে চিকিৎসা নিন। বিশেষ করে মাঝে মাঝে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেও হার্ট অ্যাটাকের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় বুকে ব্যথা হওয়ার ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। কাজ করা অবস্থায় যদি বুকে ব্যথা উঠে যায় এবং বিশ্রাম নিলে যদি বুকে ব্যথা কমে যায় তাহলে সেক্ষেত্রে অনেক সমস্যায় ভুগতে হয়।
শরীরে যদি আপনার অক্সিজেনের চলমান প্রক্রিয়া কমে যেতে থাকে তাহলে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়ে এই বুকে ব্যথার সৃষ্টি হয়। মধ্যবয়স্ক বা প্রাপ্তবয়স্ক কেউ যদি হাঁটা চলাফেরা করার সময় বুকে ব্যথার সৃষ্টি হয় তাহলে খুব গুরুত্বপূর্ণ সহকারে এটিকে নিতে হবে। তাই এই বুকে ব্যথার সমস্যা থেকে বাঁচতে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলা আপনার জন্য বিশেষভাবে করণীয়।
বুকে ব্যথার প্রাথমিক চিকিৎসা
আপনি যদি বুকে ব্যথার লক্ষণ কি তা না জানেন তাহলে চিকিৎসা নেওয়া সমস্যা হবে। বুকে ব্যথা কমানোর জন্য প্রাথমিক কোনো চিকিৎসা নিতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই সঠিক উপায় অনুসরণ করতে হবে। প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে আপনি ঘরোয়া পদ্ধতিকে অনুসরণ করতে পারেন।
এছাড়াও খুব বেশি তীব্র বুকে ব্যাথা হলে কোন সংকোচ না করে প্রাথমিকভাবে ম্যাসাজ করতে পারেন। বুকে ব্যথার জন্য ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে হালকা গরম পানির বোতল অথবা হট ওয়াটার ব্যাগ দিয়ে বারবার সেঁক দিতে পারেন যা আপনার বুকে ব্যথাকে কমাতে সাহায্য করতে পারে।
হালকা বুকে ব্যথার মধ্যে আপনি বিশ্রাম নিতে পারেন। যা আপনার ব্যথাকে কমিয়ে শরীরের দৈহিক কাঠামোকে একটু আরাম দিতে পারে। অনেকেই বুকের ব্যথাকে কমানোর জন্য পেইনকিলার নিয়ে থাকেন কিন্তু এই ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিবেন।
বুকে ব্যথা হলে কি ওষুধ খেতে হবে
গ্যাস্ট্রিকের কারণে বুকে ব্যথা
অনেক সময় আমাদের বুকের মাঝে ব্যথা হয়। কিন্তু এই ব্যথা ক্রমশ যদি বেড়ে যায়, তাহলে বুকে ব্যথার লক্ষণ কি? জ্বালাপোড়া শুরু হয়ে যায়, টক ঢেকুর উৎপন্ন হয়ে পেটে গ্যাস সৃষ্টি করে যা বুকের ব্যথাকে ধীরে ধীরে বাড়িয়ে দেয়। সাধারণত নিয়মিত খাবার না খেলেও এই ধরনের যন্ত্রণা হতে পারে। এই ধরনের সমস্যা মূলত গ্যাস্ট্রিকের কারণেই হয়ে থাকে।
মাঝে মাঝে অ্যান্টাসিড বা গ্যাস্ট্রিকের কোন ওষুধ খাওয়ার পর এই ব্যথা কমে যায়। গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা খুব সহজেই কমানো যেতে পারে যেহেতু এটি শরীরের অন্য কোথাও এই ব্যথা ছড়িয়ে যাওয়ার সম্ভবনা খুব বেশি একটা থাকে না। যদি আপনি নিয়মিত গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেয়ে যান তাহলে একটা সময় আপনি গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা থেকে মুক্ত হতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ চুলের সমস্যায় কারি পাতার ঘরোয়া ব্যবহার
কিন্তু হার্টের ব্যথাকে গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা ভেবে ভুল করা যাবেনা সেই ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলে বুকে ব্যথার লক্ষণ কি সেই বিষয়ে বুঝে ব্যবস্থা নিন। কারণ হৃদরোগের প্রধান লক্ষণই হচ্ছে বুকের ভিতর প্রচন্ড ব্যথা করবে। এই ব্যথা খুবই তীব্র হয়ে থাকে যার ফলে অনেক রোগীরাই গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা ভেবে ভুল করে ফেলে।
চিকিৎসা নিতে দেরি হওয়ার ফলে হৃদরোগের সমস্যা ধীরে ধীরে বেড়ে যায়। এই ব্যথা যদি নিয়মিত থাকে তাহলে রোগীর হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই বুকে ব্যথা হলে সেটি গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কিনা সেটা নিশ্চিত হয়ে তারপর চিকিৎসা নেবেন।
শেষকথা
এই পোস্টে আপনারা বুকে ব্যথার লক্ষণ কি এবং বুকে ব্যথার জন্য ঘরোয়া প্রতিকার কি হতে পারে সেই বিষয়ে জানতে পারলেন। বুকে ব্যথা নিয়ে আপনাদের মাঝে সচেতনতা না সৃষ্টি হলে এটাকে কখনোই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না তাই আপনার আশেপাশের সকলকে এই ব্যাপারে সচেতন করুন। বিস্তারিত ভালো লেগে থাকলে নিচের অংশে মন্তব্য করুন। ২৫২৭৫
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url