পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায়

আজকে আমি আলোচনা করব পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায় সম্পর্কে। আজকের পোস্টটি পড়লে আপনি জানতে পারবেন পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায় গুলো কি কি। আশা করছি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে আপনি পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায় গুলো জানতে পারবেন।
পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায়
পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায় গুলো জানতে পারলে পাইলস রোগ সারাতে আপনাদের সুবিধা হবে। আশা করছি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে আপনি পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায় গুলো জানতে পারবেন।

পোস্ট সূচিপত্র: পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায়

ভূমিকা

পাইলস সমস্যায় ভুগছেন না এমন লোকের সংখ্যা অনেক কম। বর্তমানে এই রোগটি অনেকেরই হয়ে থাকে। এর প্রধান কারণ হলো মানুষের অনিয়মিত খাদ্যাভাস এবং অনিয়মিত জীবন যাপন। যারা পাইলস আক্রান্ত তারা যে কি সমস্যায় ভুগছেন সেটা শুধু তারাই জানেন। পাইলসের সমস্যা অনেক যন্ত্রণাদায়ক। পাইলস হলে অনেক সময় ফুলে যায় এবং ফুলা অংশ থেকে রক্তপাত হতে পারে। তাই পাইলসের ফোলা কমানোর উপায় গুলো জেনে পাইলসের চিকিৎসা দ্রুত করানো উচিত।

পাইলসের ফোলা কমানোর কিছু উপায় রয়েছে। আজকে আমি পাইলসের ফোলা কমানোর উপায় গুলি নিয়ে আলোচনা করব। সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনারা পাইলসের ফোলা কমানোর উপায় গুলো সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে পারবেন। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।

পাইলস কি

সাধারণত পাইলস বলতে আমরা অর্শ রোগ কে বুঝি। ইংরেজিতে পাইলস কে বলা হয় হেমোরয়েড। মলদ্বারের ফোলা অংশ থেকে রক্তপাত হলে এবং মলদ্বার ফুলে গেলে আমরা সেটাকে পাইলস হিসেবে ধরি। পাইলস হলে অনেক সময় তাজা রক্ত মলদ্বার দিয়ে নির্গত হয়ে থাকে। অনেক সময় টিস্যু ব্যবহার করলে আমরা এটা বুঝতে পারি। পাইলসের বেদনা থেকে মুক্তি পেতে আপনাকে এর চিকিৎসা সঠিকভাবে করতে হবে।
পাইলসের ফোলা কমানোর জন্য কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে। এই পদ্ধতি গুলো ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই পাইলসের ফোলা কমাতে পারবেন। আমাদের আজকের আলোচনা পাইলস এর ফলা কমানোর উপায় নিয়ে। এই রোগ থেকে মুক্তি লাভের জন্য অনেকে এর চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চান। আজকের এই পোস্টটি পড়লে আপনারা পাইলসের ফোলা কমানোর উপায় সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন।

পাইলস এর লক্ষণ

কিছু প্রাথমিক লক্ষণ রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি পাইলস হয়েছে কিনা। এই লক্ষণ গুলো দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন। লক্ষণগুলো জটিল আকার ধারণ করলে অবশ্যই চিকিৎসকের নিকট যাবেন। নিচে পাইলসের লক্ষণগুলো দেওয়া হল।
  • পাইলস হলে পায়খানার রাস্তার আশেপাশে মাংসপিণ্ড ফুলে যায়।
  • পাইলস হওয়ার কারণে অনেক সময় মলদ্বার দিয়ে রক্তপাত হতে পারে।
  • পাইলস হলে পায়ুপথে ব্যথা করতে পারে।
  • পাইলস লক্ষণ হিসেবে আরেকটি হল হল পায়ুপথে চুলকানি।
  • অনেক সময় পাইলসের কারণে মলের সাথে রক্ত যেতে পারে।
  • পাইলস হলে পায়ুপথে পিচ্ছিল পদার্থ বের হতে পারে।
  • পাইলস হলে মলদ্বারের আশেপাশে ফুলে শক্ত হয়ে যায়।
  • পাইলস হলে মলত্যাগের সময় অস্বস্তি বোধ হয়।
উপরোক্ত লক্ষণ গুলি দেখা দিলে বুঝবেন যে আপনার পাইলস হয়েছে। দ্রুত পেজ থেকে মুক্তির জন্য অবশ্যই বাড়িতে চিকিৎসা গ্রহণ করবেন। যদি পাইলস জটিল আকার ধারণ করে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করবেন।

পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায়

পাইলস হলে পাইলস আক্রান্ত স্থানে ফুলে যায় অনেক সময়। আজকে আমরা পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায় গুলো নিয়ে আলোচনা করব। পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায় গুলো জানলে আপনারা বাড়িতে এর চিকিৎসা করতে পারবেন। নিচে পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায় গুলো আলোচনা করা হলো।
  • বরফ: পাইলস হলে মলদ্বারের আশেপাশে ফুলে যায়। এই ফোলা ভাব কমানোর জন্য ব্যবহার করতে পারেন বরফ। একটি গামলায় পানি নিয়ে তাতে বরফের টুকরা যোগ করুন। এবার বরফ মিশ্রিত পানিতে কিছুক্ষণ বসে থাকুন। দেখবেন কিছুক্ষণের মধ্যে আপনার পাইলসের ফোলা ভাব কমে গেছে। পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায় গুলোর মধ্যে এই উপায়টি অনেক কার্যকরী। তাই পাইলস চিকিৎসায় ঘরোয়া এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করুন। এই পদ্ধতি ব্যবহার করার পর আপনার পাইলসের ফোলা অংশ দ্রুত কমে যাবে। আবার অনেক সময় আইস ব্যাগে বরফ ঢুকিয়ে পাইলস আক্রান্ত স্থানে ব্যবহার করুন দেখবেন ভালো ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে।
  • গরম পানির ভাপ: পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায় হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন গরম পানির ভাপ। প্রতিদিন গোসলের সময় গরম পানির ভাপ নিন। একটি পাত্রে গরম পানি নিন। এরপর পানিতে কুসুম কুসুম গরম অবস্থায় আসলে আসলে এই পানির উপর বসে পড়ুন। এতে আপনার পাইলসের ফোলা অংশে গরম পানির ভাপ লাগবে। এর ফলে পাইলসের ফুলা অংশ কমে যাবে। তাই এই পদ্ধতিটি বাড়িতে ব্যবহার করতে পারেন। এই পদ্ধতিটি পাইলসের ফোলা কমাতে অনেক কার্যকরী।
  • আপেল সিডার ভিনেগার: পাইলসের ফোলা কমানোর উপায় হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন আপেল সিডার ভিনেগার। আপেল সিডার ভিনেগার আক্রান্ত স্থানে ব্যবহার করলে ব্যথা কমে যাবে এবং খোলা অংশ আস্তে আস্তে কমে যাবে।
  • ক্যাস্টর অয়েল: পাইলসের ফোলা কমানোর উপায় হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন ক্যাস্টর অয়েল। ক্যাস্টর অয়েল পাইলসের ফোলা অংশে লাগিয়ে অপেক্ষা করুন দেখবেন পাইলসের ব্যথা নিরাময় হওয়ার সাথে সাথে পাইলসের খোলা অংশ কমে গেছে।
  • ঘৃতকুমারী: ঘৃতকুমারী পাইলসের চিকিৎসায় অনেক কার্যকর। আক্রান্ত স্থানে অ্যালোভেরা জেল লাগালে পাইলসের ফোলা অনেকটা কমে যায়। তাই পাইলসের ফোলা কমানোর উপায় হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন ঘৃতকুমারী।
  • উইচ হ্যাজেল: পাইলসের ফোলা কমানোর উপায় হিসেবে ব্যবহার করুন উইচ হ্যাজেল। এটি ব্যবহারের ফলে আপনার আক্রান্ত স্থানের ফোলা কমে যাবে এবং ব্যথা কমে যাবে। পাইলসের চিকিৎসায় এটি অনেক কার্যকরী।

কি খেলে পাইলস ভালো হয়

কি খেলে পাইলস ভালো হয় এখন আমরা সে সম্পর্কে জানব। কিছু জিনিস মেনে চললেই আপনার পাইলস দ্রুত সেরে যেতে পারে।
  • আঁশযুক্ত খাবার খেতে পারেন: সাধারণত আঁশযুক্ত খাবারে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। এসব ফাইবার আমাদের মলকে নরম রাখে। এর ফলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য হবে না। আর যেহেতু আমরা জানি কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে ধীরে ধীরে পাইলস রোগটি হয়। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য ভালো হয়ে গেলে আপনার পাইলস রোগ সেরে যাবে।
  • প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন: আমরা অনেকেই প্রতিদিন খুব অল্প পরিমাণ পানি পান করে থাকি। অল্প পানি খেলে শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে। আর পাইলস রোগ থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে আপনি প্রচুর পানি পান করবেন। পানি বেশি খেলে আপনার পাইলস রোগ আস্তে আস্তে সেরে যাবে।
  • তেলযুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকুন: তেল যুক্ত খাবার আপনার পাইলসের জন্য অনেক ক্ষতিকর। তেল যুক্ত খাবার খেলে আপনার পায়খানা কষা হয়ে যাবে। এর ফলে আপনার পাইলসের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। তাই তেলযুক্ত খাবার যেন কম খাওয়া যায় এটা চেষ্টা করবেন।
  • লেবু ও আদার রস: নিয়মিত লেবু ও আদার রস খেতে পারেন। এতে করে আপনার পাইলস সমস্যা দূর হতে পারে। লেবুতে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা পাইলস রোগের জন্য অনেক উপকারী। অন্যদিকে আদাতে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান পাইলসের জন্য অনেক উপকারী। তাই পাইলসের চিকিৎসায় লেবু ও আদার রস একসাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
  • জাম: পাইলস ভালো করার জন্য খেতে পারেন জাম। জাম আপনার পায়খানা পরিষ্কার রাখে। নিয়মিত জাম খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয় না। আর আপনার পাইলস রোগ ধীরে ধীরে সেরে যায়। তাই প্রতিদিন নিয়মিত দুই চারটি করে জাম খাবেন।
  • তিল: পাইলসের চিকিৎসার জন্য খেতে পারেন তিল। তিল খেলে আপনার পাইলসের সমস্যা আস্তে আস্তে দূর হয়ে যাবে।
  • অ্যালোভেরা: পাইলস রোগ ভালো করতে খেতে পারেন অ্যালোভেরা। অ্যালোভেরা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। আপনার পাইলস রোগ ভালো করতে সহায়তা করে।
  • নিম: পাইলস রোগ ভালো করার জন্য নিম অনেক কার্যকরী। যদি নিয়মিত নিম খেতে পারেন তাহলে পাইলস রোগ দ্রুত সেরে যাবে।

শেষ কথা: পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায়

প্রিয় পাঠক, আজকের এই অনুচ্ছেদে আমরা আলোচনা করলাম পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায় সমূহ নিয়ে। আশা করছি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে আপনারা জানতে পেরেছেন পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায় গুলি কি কি। পাইলস এর ফোলা কমানোর উপায় গুলো জেনে আপনারা বাড়িতে এর চিকিৎসা করতে পারবেন।
আমার পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে এবং আমার পোস্ট পড়ে আপনাদের উপকার হয় তাহলে অবশ্যই পোস্টটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। আপনাদের মূল্যবান মতামত আমাদেরকে জানাবেন। ধন্যবাদ। ২৫৭৯২

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url