অল্প বয়সে কোমর ব্যথার কারণ

অল্প বয়সে কোমর ব্যথার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে রাখলে কোমর ব্যথা রোধ করা সম্ভব। অল্প বয়সে কোমর ব্যথার কারণ সম্পর্কে যেহেতু নিচে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে তাই, এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনি  অল্প বয়সে কোমর ব্যথার কারণ সম্পর্কে জানতে পারবেন।

পেজ সূচিপত্র: অল্প বয়সে কোমর ব্যথার কারণ

ভূমিকা 

অনেকেই মনে করে থাকে যে, কোমর ব্যথা শুধুমাত্র বৃদ্ধদের হয়। এমন ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। কেননা যে কোন ব্যক্তির কোমর ব্যথা হতে পারে। এমনকি শিশুদেরও কোমর ব্যথার সমস্যা দেখা দিতে পারে। সাধারণত যে সকল কারণে অল্প বয়সেই কোমর ব্যথার মতো জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে, সেই কারণগুলো সম্পর্কে এই আর্টিকেলটিতে বিস্তারিত আলোচনার তুলে ধরা হবে। 

অল্প বয়সে কোমর ব্যথার কারণ

কোমর ব্যথা হওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। এই কারণগুলোর কারণে যেকোনো ব্যক্তি কোমর ব্যথায় আক্রান্ত হতে পারে। কোমর ব্যথায় আক্রান্ত হওয়ার যে সকল কারণ রয়েছে সেগুলো নিচে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হলো। 
  • খেলাধুলায় আঘাতপ্রাপ্ত হওয়া: কোমর ব্যথা হওয়ার যে সকল কারণ রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি কারণ হলো খেলাধুলায় আঘাতপ্রাপ্ত হওয়া। বিশেষ করে তরুণ বয়সে খেলাধুলা করার সময় এই ধরনের আঘাত হয়ে থাকে। তাই অল্প বয়সে কোমার ব্যথার জন্য দায়ী হলো খেলাধুলায় আঘাত পাওয়া।
  • যুভেনাইল ইডিওপ্যাথিক আর্থরাইটিস: বিশেষ এক ধরনের আর্থ্রাইটিস বা বাত ব্যথা রয়েছে এই বাত ব্যথাকে বলা হয় যুভেনাইল ইডিওপ্যাথিক আর্থরাইটিস যা অল্প বয়সী ছেলে-মেয়েদের হয়ে থাকে। এই ধরনের বাত ব্যথার কারণেও কোমরে ব্যথা হতে পারে।
  • জেনেটিক সমস্যা: পিতা-মাতা বা বংশের কারো যদি কোমর ব্যথার সমস্যা থাকে, তাহলে জেনেটিক কারণে ও অল্প বয়সে কোমর ব্যথার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। সুতরাং অল্প বয়সে কোমর ব্যথা হওয়ার পেছনে অন্যতম একটি কারণ হলো জেনেটিক সমস্যা।
  • অত্যধিক পরিমাণে মানসিক চাপ: অল্প বয়সে যদি কোন ব্যক্তি অত্যধিক পরিমাণে মানসিক চাপে আক্রান্ত হয়, সেক্ষেত্রে সে মানসিক চাপের কারণেও তার কোমরের ব্যথা হতে পারে।
  • স্পাইনাল কর্ডের সমস্যা: স্পাইনাল কার্ডে যদি কোন ধরনের সমস্যা কিংবা সংক্রমণ থাকে তাহলে এর ফলেও অল্প বয়সে কোমরের ব্যথা হতে পারে। তাই কোমরের ব্যথা হলে অবশ্যই আপনাকে চেকআপ করতে হবে যে, স্পাইনাল কর্ডের কোন সমস্যা রয়েছে কিনা। 
  • অতিরিক্ত ওজন: কোমর ব্যথার যতগুলো কারণ রয়েছে সেই কারণসমূহের মধ্য থেকে অন্যতম একটি কারণ হলো শরীরের অতিরিক্ত ওজন। অল্প বয়সে যদি আপনি অত্যাধিক স্থূল হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার কোমর ব্যথা সহ আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • ধূমপান: ধূমপানের কারণে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে ধূমপানের কারণে হাড় ক্ষয়জনিত রোগ হতে পারে। আর হাড়ক্ষয় জনিত রোগ হলে এর কারণে কোমরের ব্যথা দেখা দিতে পারে। তাই ধূমপান করলে কোমর ব্যথা হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। 
  • মদ্যপান: আপনি যদি অল্প বয়স থেকেই মদ্যপান করা শুরু করেন, তাহলে আপনার কোমর ব্যথার সমস্যা দেখা দিতে পারে। কেননা অল্প বয়সেই মদ্যপান করলে তার শরীরের উপরে বিরূপ প্রভাব ফেলে এবং হাড় ও হাড় জোড়ার উপরেও বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। আর এ কারণেই মদ্যপান করলে কোমর ব্যথার সম্ভাবনা থাকে। 
  • দুর্ঘটনা বা ট্রমা: দুর্ঘটনা জনিত কারণে যদি কখনো আপনি আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন, তাহলে কিন্তু অল্প বয়সেই কোমরের ব্যথা দেখা দিতে পারে। আবার দুর্ঘটনার শিকার হয়ে হয়ে ট্রমা জনিত সমস্যার হলেও অল্প বয়সে কোমর ব্যথা দেখা দিতে পারে।  
  • জন্মগত ত্রুটি: কখনো কখনো জন্মগত ত্রুটির কারণেও কোমরের ব্যথা দেখা দিতে পারে। অর্থাৎ জন্মের সময় যদি কোন ভাবে কোমরে বা পিঠে আঘাত লাগে তাহলে পরবর্তীতে সেই শিশুর কোমর ব্যাথার মত সমস্যা হতে পারে। 

কোমর ব্যথার চিকিৎসা

অল্প বয়সে কোমর ব্যথার কারণ সমূহ ইতোমধ্যে উপরে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আর্টিকেলটির এই অংশে কোমর ব্যথার চিকিৎসা তুলে ধরা হবে। অল্প বয়সে যদি কোমরে ব্যথা দেখা দেয় সেক্ষেত্রে নিম্ন বর্ণিত চিকিৎসা সমূহ আপনার জন্য উপযুক্ত হতে পারে। নিম্ন বর্ণিত চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করার মাধ্যমে কোমর ব্যথা থেকে মুক্তি লাভ করা সম্ভব। আসুন দেখে নেয়া যাক, কোমর ব্যথার চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। 
  • ওষুধ সেবন করা: আপনি যদি কোমর ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে চান, সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ ক্রমে ঔষধ সেবন করতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শক্রমে ঔষধ সেবন করলে আশা করা যায় অল্প সময়ের মধ্যেই কোমরের ব্যথা থেকে মুক্তি লাভ করতে পারবেন। 
  • সার্জারি: ঔষধ সেবন করার পরেও যদি আপনার কবরের ব্যথা দূর না হয় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে সার্জারি করতে হবে। সার্জারি করলে কোমর ব্যথা থেকে মুক্তি লাভ করা যায়, তবে সার্জারি করার জন্য অবশ্যই আপনাকে হাড়জোড়া ও বাত ব্যথা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে
  • থেরাপি গ্রহণ করা: বিভিন্ন ধরনের থেরাপি রয়েছে যেগুলো গ্রহণ করার মাধ্যমে কোমর ব্যাথা থেকে মুক্তি লাভ করা যায় তাই চাইলে আপনি থেরাপি ব্যবহার করেও কোমর ব্যাথা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
  • আকুপাংচার: বিনা ঔষধে কোমর ব্যথার চিকিৎসা করতে চাইলে আকুপাংচার পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন। আকুপাংচার পদ্ধতি হলো হাতের বিভিন্ন নার্ভে পরিমিত পরিমাণে চাপ প্রয়োগ করা। সঠিকভাবে নির্ণয় করে যদি আপনি আকুপাংচার করতে পারেন তাহলে আশা করা যায় দ্রুত কোমর ব্যথা থেকে মুক্তি পাবেন।
  • ব্যায়াম: কোমর ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে ব্যায়ামের বিকল্প নেই আপনি ডাক্তারের পরামর্শক্রমে কোমর ব্যথা দূর করার ব্যায়ামগুলো নিয়মিত করতে পারেন আশা করা যায় নিয়মিত ব্যায়াম করলে দ্রুত সুস্থ হতে পারবেন। তাই কোমর ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত ব্যায়াম করুন। 
  • ভেষজ ঔষধ: কোমর ব্যথা থেকে মুক্তি লাভ করার আরেকটি প্রাকৃতিক উপায় হলো ভেষজ ঔষধ সেবন করা। আপনি যদি সঠিক নিয়ম অনুযায়ী ভেষজ সেবন করেন, তাহলে আশা করা যায় অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আপনি সুস্থ হতে পারবেন। 
  • ম্যাসেজ: কোমরের ব্যথা দূর করার আরেকটি কার্যকর উপায় হল ম্যাসেজ করা। অভিজ্ঞ ব্যক্তি কর্তৃক আক্রান্ত স্থান ম্যাসেজ করার মাধ্যমে কোমর ব্যাথা থেকে মুক্তি লাভ করা যায়। 

কোমর ব্যথার ট্যাবলেট কি

অল্প বয়সে কোমর ব্যথার কারণ সমূহ উপরে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। নিচে কোমর ব্যথার ঔষধের নাম তুলে ধরা হবে। কোমর ব্যথার বেশ কিছু ঔষধ রয়েছে। যেই ঔষধ গুলো সেবন করার মাধ্যমে কোমর ব্যথা থেকে মুক্তি লাভ করা সম্ভব। ডাক্তারের পরামর্শক্রমে যদি আপনি নিম্ন বর্ণিত ঔষধ গুলো সমান করেন তাহলে আশা করা যায় কোমর ব্যথা থেকে মুক্তি পাবেন। 

শেষ কথা

উপরে উল্লেখিত তথ্যগুলো যদি আপনি মনোযোগের সাথে পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই, অল্প বয়সে কোমর ব্যথার কারণ সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনেছেন। কেননা উপরে অল্প বয়সে কোমর ব্যথার কারণ সম্পর্কে বিস্তর আলোকপাত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি কোমর ব্যথা থেকে মুক্তি লাভের উপায় সম্পর্কেও তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ১৬৪১৩

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url