আপনার কিডনি ভালো রাখার উপায়।
ভূমিকাঃ
আমরা জানি কিডনি ভালো থাকলে আমরা ভালো থাকবো।
কারণ কিডনি আমাদের রক্ত পরিস্কার করে আমাদের সুস্থ রাখে। প্রতিনিয়ত আমাদের রক্ত দুষিত
হয়। ঐ বর্জ এবং অতিরিক্ত তরল ফিল্টার করার জন্য ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করতে কিডনি কাজ
করে।
এসব কাজ সঠিক ভাবে করে বলে আমরা সুস্থ্য থাকি।
তাই কিডনি সুস্থ্য রাখার নিয়ম জেনে কাজ করবো। সঠিক নিয়মের খাদ্যাভ্যাস, হাইড্রেট থাকা,
ব্যায়ামকরা ইত্যাদি কাজ নিয়মিত করে আমরা আমাদের কিডনিকে ভালো রাখবো।
পেজ সূচিপত্রঃ
- ভূমিকাঃ
- কিডনির স্বাস্থ্য ঝুঁকি।
- কিডনি সমস্যার লক্ষণ।
- কিডনি স্বাস্থ্যের জন্য হাইড্রেশন থাকা।
- কিডনি ভালো রাখার জন্য সুষম খাদ্য গ্রহণ।
- কিডনির জন্য নিয়মির ব্যায়াম।
- শেষ কথাঃ
কিডনির স্বাস্থ্য ঝুঁকি।
আমদের সামগ্রিক সুস্থতা এবং স্বাস্থ্য ঠিক
রাখতে কিডনি একটি বিশেষ ভূমিকা রাখে। কিডনি আমাদের রক্ত থেকে বর্জ্য, অতিরিক্ত তরল
পদার্থ ফিল্টার, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন এবং প্রয়োজনীয় হরমোন তৈরি করে থাকে। কিডনি আমাদের
সুস্থ্যই আছে কিন্তু তা সঠিক ভাবে কাজ করার জন্য যত্ন নেয়া উচিত। সাধারণত কিডনি স্বাস্থ্য
ঝুঁকিগুলির মধ্যে একটি হল পুষ্টির অভাব। অতিরিক্ত লবন জাতিও খাবার গ্রহণ, ফাষ্টফুট
খাওয়া, চিনিযুক্ত পানীয় খাওয়া ও মদ্যজাতিয় খাবার গ্রহণ কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
এই খাবার গুলি আপনার কিডনির উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসের মতো জটিলতা
সৃষ্টিকারি রোগগুলো কিডনি রোগের প্রধান ঝুঁকির কারণ। তাই এসকল রোগ গুলো সঠিক ভাবে মোকাবিলা
করা কিডনি ভালো রাখার অন্যতম সর্ত হতেপারে। কিডনি ভালো রাখতে গেলে সুষম খাদ্য গ্রহণ
জরূলি। সাথে সঠিক নিয়মে পানি পান করা, ধুমপান এড়িয়ে চলা। কারণ ধুমপানের কারনে রক্তনালীগুলির
ক্ষতি হয়। রক্ত চলাচল ও রক্ত প্রবাহ হ্রাস পাওয়ার সাথে সাথে কিডনির কার্যকারিতা হ্রাস
পায়। কিছু ওষুধ এবং চিকিৎসা শর্তও কিডনির স্বাস্থ্যের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এসব বিষয়ে
আমাদের সাবধান হওয়া উচিৎ।
কিডনি সমস্যার লক্ষণ।
আমাদের কিডনি আমাদের শরীরের সামগ্রিক কার্যকালাপের
গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। তাই কিডনির
সমস্যার লক্ষণগুলি আমাদের জানা প্রয়োজন।
লক্ষণগুলিঃ
১। কিডনি সমস্যার সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলির
মধ্যে একটি হল প্রস্রাবের পরিবর্তন। আপনি যদি লক্ষ করেন আপনার বেশি ঘনঘন প্রস্রাব হচ্ছে,
প্রস্রাব হতে সমস্যা হচ্ছে, প্রস্রাবের সাথে রক্ত য়াচ্ছে। তাহলে বুঝবেন আপনার কিডনি
সঠিক ভাবে কাজ করছেনা।
২। শরিরের বিভিন্ন অংশে ফুলে যাওয়া আরেকটি
লক্ষণ। কিডনি শরিরের অতিরিক্ত তরল ফিল্টার করে থাকে। যদি এই ফিল্টারিং কার্যক্রম সঠিক
ভাবে না হয়। তবে শরিরের বিভিন্ন অংশে তরল জমে ফুলার সৃষ্টি করে।
৩। ক্লান্তি বোধ করা বা দুর্বলতা অনুভব করা
কিডনি সমস্যার আর একটি কারণ। কিডনি সঠিক ভাবে কাজ না করলে। শরিরের বিভিন্ন কোষে খাদ্য
সঠিক ভাবে যেতে পারেনা। যার কারনে শরির দুর্বল ভাব লাগে।
৪।
পিঠে ও পাশে ব্যথা কিডনি রোগের সাধারণ লক্ষন। কিডনি পেটের পিছনে অবস্থিত তাই ঐ জায়গায়
ব্যথা অনুভব হয়। ব্যথা তে নিস্তেজ এবং অবিরাম বা তীব্র হতে পারে।
৫। যখন কিডনি সঠিক ভাভে কাজ করেনা, ঠিক তখন
শরীরে টক্সিন তৈরি হয় যা ক্ষুধার পরির্বত এবং ওজন হ্রাস করতে পারে।
উল্লিখিত লক্ষণগুলি যদি আপনার শরিরে প্রকাশ
পায় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা প্রয়োজন।
কিডনি স্বাস্থ্যের জন্য হাইড্রেশন থাকা।
আমরা জানি কিডনি রক্ত পরিস্কার কতে বা ফিল্টার
করে। যা তরল আকারে থাকে। তাই আমাদের শরিরে তরল যোগান আসে পানিও জল থেকে। তাই প্রচুর
পরিমানে পানি পান করা আবস্যক। যাতে আমাদের শরির ডিহাইড্রেশন না হয়ে পড়ে। পানি আপনার
শরির থেকে টক্সিন এবং অন্যান্য বর্জ্য পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। প্রতিদিন কমপক্ষে
আট গ্লাস জল পান করা প্রয়োজন।
আপনার হাইড্রেশন অবস্থান হিসাবে প্রস্রাবের
রঙ পরিক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। ফ্যাকাশে হলুদ প্রস্রাব ভাল হাইড্রেশনের লক্ষন, আর গাঢ
হলুদ প্রস্রাব ইঙ্গিত দেয় যে আপনাকে আরও পানি পান করা দরকার। পানিও জল আছে এমন খাদ্য
আপনার তালিকায় যুক্ত করতে পারেন। যেমনঃ শসা, তরমিজ, কমলালেবু মত উচ্চ জলের উপাদান আছে
এমন ফল ও শাকসবজি আপনাকে পুষ্টি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য
করবে।
কিডনি ভালো রাখার জন্য সুষম খাদ্য গ্রহণ।
আপনার কিডনি সুস্থ রাখতে এবং সঠিকভাবে কাজ
কররে সুষম খাদ্য গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিডনি ভালো রাখতে কিডনি বান্ধব খাদ্য
গ্রহণ করা জরুরি। মাংস বা দুগ্ধজাত খাবারে উপর লোভ করার পরিবর্তে মটরশুটি, মসুর ডাল
এবং পনিরের মতো উদ্ভিদ-ভিত্তিক প্রোটিনের উৎসগুলিকে আপনার ডায়েতে অন্তর্ভুক্ত করা চেষ্টা
করুন এইগুলিতে শুধু প্রোটিনের পরিমান কম তা নয়, এতে ফাইবার রয়েছে যা আপনার কিডনি ভালো
রাখতে সাহায্য করবে।
প্রতিদিন পরিমান মত পানি পান করা গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার বয়স, ওজন ও উচ্চতা উপর ভত্তি কতে কতটুকু
পান পান করতে হবে তা টিক করা। কমকরে দিনে আট গ্লাস পানি পান করা প্রয়োজন। অতিরিক্ত
ওজন বা স্থূলতা আপনার ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, যা আপনার কিডনি
স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারন হতে পারে।
কিডনির জন্য নিয়মির ব্যায়াম।
নিয়মিত ব্যায়াম শুধুমাত্র একটি সুস্থ শরীরের
জন্যই প্রয়োজন তা নয় ওজন নিয়ন্ত্রন ও কিডনি সুস্থ রাখতে বিশেষ ভুমিকা পালন করে। ব্যায়াম
উচ্চ রক্তচাপ কমাতে এবং ডায়াবেটিসের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
কিডনি রোগথেকে ভালো রাখে। নিজেকে ফিট রাখতে ব্যায়াম জরূরি। সপ্তাহের বেশিরভাক দিন কমপক্ষে
৩০ মিনিট মাঝারি ব্যায়ামের লক্ষ রাখুন। এর মধ্যে দ্রুত হাঁটা, জগিং, সাইকেল চালানো,
সাঁতার কাটা বা ফিটনেস ক্লাসে অংশগ্রহণের মত কার্যকালাপ রাখতে পারেন।
ব্যায়াম করা যেমন জরুরি ঠিক তেমনি অতি পরিশ্রম
কিডনির জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। অতিরিক্ত পরিশ্রমের হলে পেশী ভেঙ্গে যেতে পারে এবং
কিডনির উপর অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে। তাই নিয়ম মেনে ব্যায়াম ও বিশ্রাম করুণ।
শেষ কথাঃ
সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা বজায় রাখার
জনয কিডনির যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। হাইড্রেটেড থাকা, সুষম খাবার গ্রহন, নিয়মিত ব্যায়াম
করা এবং উচ্চ সোডিয়ামযুক্ত খাবার বাদ দেয়ার মতো সহজ টিপস গুলো মেনে চলুন। সুখী ও স্বাস্থ্যকর
জীবণ যাপন করুন। এই আটিকেল পড়ে ভালো লাগলে অন্যদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url